সেইদিনের এক্সাইটমেন্ট ছিল আমার জীবনের সুন্দরতম অপেক্ষমান মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি। তুমি আসছো দুনিয়াতে! দৌড় দিয়া গেলাম তোমারে দেখতে, প্রথম কোলে নিলাম আর হঠাৎ কইরাই নিজেরে খুব দায়িত্ববান মামা মনে হইলো। তোমার আগে তোমার খালাতো ভাই তাফহীমের জন্মেও আমি বড্ড খুশি হইসিলাম। কিন্তু আমাদের পরিবারের প্রথম কন্যা সন্তান তুমি, তোমার নাম রাখা হইলো আয়েশা তারান্নুম। ঐদিন তোমারে দেখতে যাওয়ার সময় রাস্তা দিয়া দৌড়াইতাসিলাম আর মনজগতে উচ্চমাত্রিক আনন্দ অনুভূত করতেসিলাম।
তোমার মা খুব অসুস্থ কান্নাও করসিলো, কিন্তু তোমারে দেইখা তার মুখের হাসিখানা দেইখা আবার আমার কান্না করতে মন চাইলো। আর তোমার বাপ রে দেইখা তো মনে হইতাসিলো বিশ্ব জয় কইরা ফালাইসে , কত্ত খুশি! তোমার নানা, নানু, দাদু এবং সক্কল আত্মীয় স্বজনই বড্ড খুশি। আমি মামা হিসাবে দায়িত্ববান হওয়া শুরু করলাম, তোমরাও বড় হইতে থাকলা। বলতে না বলতেই প্রথম স্কুলে ভর্তি হইলা, খাওয়া দাওয়া নিয়া একটু জ্বালাইলেও তুমি একটা লক্ষী মেয়ে ছিলা। প্রায় সময় তোমার সাথে আমার আবোল তাবোল আলাপ হইতো, আমার কোলে উইঠা বুকের উপরে শুইয়া নিষ্পাপ হইয়া যখন ঘুমায় যাইতা তখন কেন জানি তোমারে আমার কলিজার অংশ মনে হয়তো। চুলে হাত বুলায় দিয়া দোয়া কইরা দিতাম মন থেইকা, আস্তে কইরা কোলে থেকে নামাইতাম। এই কারণে তোমার মা খালারা আমারে নিয়ে সর্বদাই গর্ব করতো তোমাদের সাথে আমার এতো সৈন্দর্য্যপূর্ণ সম্পর্ক দেইখা।
আজকে ২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৭ তারিখ, তোমারে কোলে নেইনা বছরখানেক হইলো। কত শত আলাপ আলোচনা আমাদের, তোমার অভিযোগ গুলা শুনতাম কি সুন্দর কইরা, কারণ ছাড়া সবাই মিইলা হাসতে থাকতাম আর তোমার নানু রাইগা আইসা বলতো কি শুরু করসস। তোমরা এমনেই বড় হইয়া যাবা আর আমরা বুড়া হইয়া যামু। তোমারে নিয়া তোমার মামা খুব গর্বিত, ভবিষ্যতে যহন আমার এই লেখা পড়বা তখন হয়তো আমি দুনিয়ায় নাও থাকতে পারি। কিন্তু মনে রাইখো মামা তোমারে আমি বড্ড ভালোবাসতাম তার লগে আরো একটা জিনিষ উপদেশ হিসাবে বলি, নিজের শিকড় আর আদর্শরে ভুইলা যাইয়োনা। তোমরাই আমাগোর অনুপ্রেরণা ছিলা এবং থাকবা।
ইতি তোমার সা'দ মামা।
স্মৃতির পাতায় তারান্নুমের জন্ম।
Comments
Post a Comment